মানিব্যাগ আমার এখন চামড়ার ব্যাগ

মানিব্যাগ আমার এখন চামড়ার ব্যাগ

  1. মানিব্যাগ আমার এখন চামড়ার ব্যাগ

    গতরাতে বাসায় ঢুকতে না ঢুকতেই
    পুঁচকির আদেশ মেজদা আগামীকাল
    আন্তঃপ্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায় গান
    প্রতিযোগিতায় নিয়ে যেতে হবে।
    পুঁচকির পরিচয় ~~আমার আন্টির
    মেয়ে ।আন্টির
    মেডিকেলে রাত্রে ডিউটি থাকলে আমাদের
    বাসায় থাকে।
    তুই নিজে যা।আমাকে বলস কেন?
    হুঁ হুঁ
    নিয়ে যেতে হবে,আমি ননায়কে(আমার
    মা) লাগিয়ে দিব(কেঁদে কেঁদে)।
    যা বলে দে।কিছু হবে না।হা হা হা।
    এবার দাঁত বত্রিশটা বের
    করে হাসি বন্ধ হলো আমার।আন্টির
    কল।
    বুঝে গেছি কেন!রাজি হলাম।
    তাইলে তুমি আমাকে কাল
    নিয়ে যাইবা হিঃ হিঃ হিঃ
    ওই বেয়াদব চুপ থাক।গলা তোর কাকের
    মত তাও আবার এক লাইন গাইতে দশ
    বার ভুল করিস।তুই তো জিতবি না শুধু
    শুধুই আমার কষ্ট।
    দেখে নিও।ওকে চুপ।সকালে তোমার
    থেকে একটু শ্যাম্পু
    দিবা,সকালে আবার
    মা থাকবে না।তুই ছেলেদের শ্যাম্পু
    দিবি?তোর তো চুলে ই নেই।
    হাহাহা!
    বেশি আওয়াজ শুনে আমার
    মা জননী হুংকার ছাড়িতেছে।
    সো চুপ
    হয়ে গেলাম।খাবার খেয়ে ঘুম।
    .
    .
    .
    সকাল হলো।
    কীরে তুই এখন ও রেডি হস নায়?কত
    আগে।দাঁড়াও একটু লোশনটা লাখায়।
    মাখ মাখ যতই মাখ আমার মত
    হয়তে পারবি না।হাহাহাঃ
    তুমি কালা।সেনাপতি বিটকেল।
    হঃ গাড়ি নিতে হবে?
    হেঁটে যেতে পারবি না?
    হ্যা? গাড়ি নাও পারব না হাঁটতে।
    কতদূরে... আমি নিজে ও চিনি না।
    তোর ডায়রি কোথায়?
    নি নাই।
    কেন?ভুলে যাবিতো.
    ভুলব না আমার মুখস্থ আছে।
    প্যাক প্যাক করিতে পৌছালাম।
    ওরে বাবা একি দেখি বাচ্চার
    মেলা।
    দাদা ওই দিকে চল আমার টিচার
    বান্ধীরা আছে ওইখানে।
    স্যার ম্যামদের সালাম দিলাম
    পুরানো কয়েকটা আছে।আর
    গুলো চিনি না।
    এই প্রতুষ্যা(পুঁচকি)তোর
    সাথে এটা কে?
    পিচ্চিগুলো পিসপিস করে।
    পুঁচকি বলে এটা আমার মেজদাদা।
    এক পিচ্চি প্রশ্ন করে দাদা আপনি এত
    লম্বা কেন?
    আমি হরলিক্স,কমপ্লেন খায়তো তায়।
    আরেক পিচ্চি ভাইয়া তোমার
    গেন্জিতে ওইটা কি?আমি একটু ধরি?
    না বাবু এটা তোমাকে কামড় দিবে।
    হায়রে ডিজিটাল বাচ্চা কাচ্চা।
    আগে জানলে,তোদের জ্বালায় ইন
    করে আসতাম।
    আবার ও পুঁচকি চেচায়
    উঠছে দাদা আমার
    কি ক্ষিদা লাগছে।
    চল তাইলে কিছু খাবি।
    তোমরা কিছু খাবে বাবুরা?
    জানতে চাওয়ায় আক্কেলসেলামী।
    একটা বলে এটা,একটা ওইটা,সেটা।
    শেষ পর্যন্ত দোকানে নিয়ে গেলাম
    বিল
    বারোটা বাজায়লো।মাইকে গান
    প্রতিযোগিদের ডাকা হচ্ছে।
    ওয়! তাড়াতাডি শেষ কর গান
    গাইতে হবে নাকি?
    এইতো দাদা শেষ।
    স্টেজে তুলে দিলাম।একজনের
    পরে একজন গান করছে।এবার পুঁচকির
    পালা।.........
    যা ভাবছিলাম
    .
    এক লাইন তিনি ভুল
    গাহিয়া ফেলেছেন।
    গান শেষ।পাশে আসল.ওরে খাবিল
    আস
    বারবার বলছি ডায়রি নেয়।
    নিলি না।
    চল যাইগা বসে আর কি হবে!পুরষ্কার
    তো পাবি না।শুধু আমি নাকি সবাই
    একটু
    একটু ভুল করেছে।শেষ হয়ে গেলে যাব।
    আরেকটু বসো না মেজদাদা.
    হুম।
    এরভিতর আবার
    বাচ্চা কাচ্চা গুলো হাজির।
    পাশে চেনা আন্টি বলল চিপস
    কিনে দিতে।টাকা নিতে বলল।
    সম্মান
    রাখতে নিলাম না.আবারো টাকার
    শ্রাদ্ধ।
    যাক অনুষ্ঠান শেষের দিকে।পুরষ্কার
    বিতরন চলছে.
    ওমা!
    একি?
    .
    .
    .
    .
    পুঁচকির নাম ধরে ডাকতেছে।
    তৃতীয় হয়েছে।ওই গাধি।যা তোর নাম
    ডাকে।
    তিনি দাঁত বত্রিশটা বের
    করিয়া হাসতে হাসতে হাসিলেন।
    জানাই আছে কি বলবে।
    দেখছ আমি পুরষ্কার পাইছি যে!
    হ।দেখলামতো লাড্ডু হয়ছ।
    ভালো হয়ছে।পুরষ্কার পাইলে হয়ল।
    এবার চল বাসায় যায়।
    এবারতো চিনবি?
    হেঁটে যেতে পারবি না?
    আমার পা পুরো ব্যাথা।গাড়ি নাও।
    ভাগ্যিস পুরষ্কার জিতলি।
    নাহলে হাঁটায় নিয়ে যেতাম।
    আমিতো জানি জিতব হিহিহিঃ
    চুপ থাক।এই মামা যাইবেন?
    হ যামুতো
    চলেন তাইলে।
    গাড়িতে আছি,
    কে জানে গাড়ি ভাড়ার
    টাকা হবে নাকি মানিব্যাগের
    অবস্থা বড়ই করুণ।
লিখা- রিগ্যান বৈদ্য(Regun Boidya)